SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

Admission
রসায়ন - পর্যায় সারণি - পর্যায় সারণির একই গ্রুপের মৌলগুলো দ্বারা গঠিত যৌগের বিক্রিয়া

পর্যায় সারণির একই গ্রুপের মৌলগুলো যে একই রকম ধর্ম প্রদর্শন করে তা একটি পরীক্ষার মাধ্যমে তোমরা বুঝতে পারবে।
যেমন: 17 নং গ্রুপের মৌল F2, Cl2, Br2, I2 ইত্যাদি গ্যাস হাইড্রোজেনের সাথে বিক্রিয়া করে যথাক্রমে HF (g), HCl (g), HBr (g), HI (g) ইত্যাদি গ্যাস উৎপন্ন করে।
 

H2(g) + F2(g)   →     2HF (g)
 

H2(g) + Cl2 (g)     →  2HCl (g)
 

H2(g) + Br2(g)       →        2HBr (g)
 

H2(g) + 12(g)       → 2HI (g)
 

আবার, এই উৎপন্ন গ্যাসগুলোকে যদি পানিতে দ্রবীভূত করা হয় তাহলে হাইড্রোহ্যালাইড এসিড যথা হাইড্রোফ্লোরিক এসিড [HF(aq)], হাইড্রোক্লোরিক এসিড [HCl(aq)], হাইড্রোব্রোমিক এসিড [HBr(aq)], হাইড্রোআয়োডিক এসিডে [HI (aq)] পরিণত হয়।
 

HF(g) + H2O (1)  →   HF (aq) 

HCl(g) + H2O (I) → HCl (aq)
 

HBr(g) + H2O (I) → HBr (aq)
 

HI(g) + H2O (1) → HI (aq)
 

এই হাইড্রোহ্যালাইড এসিডসমূহ যেকোনো কার্বনেট লবণের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে। যেমন— ক্যালসিয়াম কার্বনেটের মধ্যে হাইড্রোফ্লোরিক এসিড যোগ করলেও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়।

CaCO3 + 2HF (aq)  →  CaF2 + CO2 + H2O
 

আবার, ক্যালসিয়াম কার্বনেটের মধ্যে হাইড্রোক্লোরিক এসিড যোগ করলেও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস তৈরি হয়।
CaCO3 + 2HCl (aq)  →  CaCl2 + CO2 + H2O
 

উপরের বিক্রিয়াগুলো থেকে বোঝা যায় যে, 17 নং গ্রুপের মৌল, F2, Clay Bravia একই রকমের ধর্ম ও বিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
 

আবার, 2 নং গ্রুপের মৌল Mg এবং Ca একই রকমের ধর্ম ও বিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
 

ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেট (MgCO3) যেমন লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড, পানি এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড প্যাস উৎপন্ন করে তেমনি ক্যালসিয়াম কার্বনেট লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, পানি এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।
 

MgCO3 + 2HCl   →  MgCl2 + CO2 + H2O
CaCO3 + 2HCl   → CaCl + CO2 + H2O

পরীক্ষণ
পরীক্ষণের নাম: ক্যালসিয়াম কার্বনেটের সাথে লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস শনান্তকরণ।
মূলনীতি: ক্যালসিয়াম কার্বনেট লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড, পানি এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।
CaCO3 + 2HCl CaCl2 + CO2 + H2O
 

প্রয়োজনীয় উপকরণ
যন্ত্রপাতি: 1. একটি গোলতলী ফ্লাস্ক 2. একটি থিসল ফানেল 3. দুইবার সমকোণে বাঁকানো একটি কাচের নির্গম নল 4. কয়েকটি গ্যাসঞ্জার 5. ছিদ্রযুক্ত ছিপি।
রাসায়নিক দ্রব্যাদি: 1. ক্যালসিয়াম কার্বনেট 2. লঘু হাইড্রোক্লোরিক এসিড 3. পানি।

কার্যপন্নতি:
1. একটি গোলতলী ফ্লাস্কে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের কিছু ছোট টুকরো নেওয়া হলো।
2. ছিপির সাহায্যে উলফ বোতলের এক মুখ দিয়ে একটি থিসল ফানেল এবং অপর মুখ দিয়ে দুইবার সমকোণে বাঁকানো নির্গম নলের এক প্রান্ত প্রবেশ করানো হলো।

3. সিল ফানেলের মধ্য দিয়ে কিছু পরিমাণ পানি গোলতলী ফ্লাকে নেওয়া হলো যেন ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং থিসল ফানেলের নিম্নপ্রান্ত পানিতে ডুবে থাকে।
4. নির্গম নলের অন্য প্রান্ত একটি গ্যাসজারে প্রবেশ করানো হলো।
5. এরপর থিসল ফানেলের ভিতর দিয়ে ধীরে ধীরে হাইড্রোক্লোরিক এসিড যোগ করা হলো। দেখা গেল ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিড বিক্রিয়া করে যে কার্বন ডাই- অক্সাইড গ্যাস তৈরি করছে তা বুদ্ বুদ আকারে নির্গম নল দিয়ে বের হয়ে আসছে।

6. নির্গম নল দিয়ে বের হয়ে আসা গ্যাসকে গ্যাসজারে সংরক্ষণ করা হলো। যেহেতু কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসের অন্যান্য গ্যাস অপেক্ষা তুলনামূলক ভারী, সেহেতু কার্বন ডাই-অক্সাইড সিলিন্ডারের নিচের দিকে জমা হবে।
 

কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের ধর্ম পরীক্ষা: 

1. উৎপন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বর্ণ লক্ষ
করা হলো। কার্বন ডাই-অক্সাইডের কোনো বর্ণ দেখা গেল না ।
2. গ্যাসজারের মুখে একটি জ্বলন্ত কাঠি ধরা হলো। কাঠিটির আগুন নিভে গেল। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস আগুন নিভাতে সাহায্য করে।
3. একটি টেস্টটিউব বা পরীক্ষানলে চুনের পানি বা ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড নিয়ে তার মধ্যে উৎপন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস প্রবেশ করানো হলো। প্রথমে সামান্য গ্যাস প্রবেশ করে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের সাথে বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের সাদা বর্ণের অধঃক্ষেপ তৈরি হলো। ফলে চুনের পানি ঘোলা হলো। এরপর আরও অধিক গ্যাস এই ঘোলা পানির মধ্যে প্রবেশ করানো হলো ফলে ক্যালসিয়াম কার্বনেট, পানি এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বিক্রিয়া করে ক্যালসিয়াম বাইকার্বনেট তৈরি করল। এতে চুনের ঘোলা পানি আবার পরিষ্কার হয়ে গেল।
 

সতর্কতা: 

1. থিসল ফানেলের শেষ প্রান্ত পানির নিচে যাতে সব সময় ডুবে থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
2. গোলতলী ফ্লাস্ককে একটি স্ট্যান্ডের সাথে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল।
 

এই পরীক্ষণের জন্য ক্যালসিয়াম কার্বনেটের পরিবর্তে শামুক, ঝিনুক, ডিমের খোসা এবং হাইড্রোক্লোরিক এসিডের পরিবর্তে ভিনেগার ব্যবহার করা যায়।


 


 

Content added By
Promotion